শনিবার বিকেলে শুরু হওয়া ১৮তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীটি রোববার ছুটির দিনে ছিল দারুণ জমজমাট। ছুটির দিন হওয়ার কারণে সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিল্পানুরাগীরা আসেন শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আনা হয় শিল্পের রস আস্বাদনের জন্য।
রোববার বেলা ১১টায় দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর দ্বার খোলে সাধারণ দর্শকদের জন্য। তবে তার ঘণ্টাখানেক আগেই শুরু হয় সেমিনার, যা চলে দিনভর। ভারতের প্রখ্যাত চিত্রকর যোগেন চৌধুরীর পাশাপাশি ভারত ও স্পেনের আর্ট কিউরেটর ও চিত্রসমালোচকেরা যোগ দেন তাতে। শিল্পের নানা মাধ্যমের বিস্তারিত এ আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন স্বাগতিক বাংলাদেশের চিত্রসমালোচকেরাও। আর বিকেলের পর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর হয়ে ওঠে একাডেমির চিত্রশালা প্লাজা। বিশাল প্রাঙ্গণে ঘুরেফিরে দর্শনার্থীরা ভিড় করেছেন প্রদর্শনী উপলক্ষে অস্থায়ী খাবারের দোকানগুলোতেও। একটা উৎসব উৎসব ভাব ছিল রোববার বিকেল ও সন্ধ্যায়।
সকালে চিত্রশালা মিলনায়তনে শুরু হয় দুই দিনের ‘আর্ট অ্যান্ড কনটেমপরারি ন্যারেটিভস’ শিরোনামের সেমিনার ও ‘আর্ট, পেডাগোগি অ্যান্ড প্রমোশন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা। সকালের পর্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের চিত্রসমালোচক মুস্তাফা জামান। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দুই অধ্যাপক ফকরুল আলম ও শামশাদ মুর্তজা এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। চিত্রসমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় দুই দিনের ‘আর্ট অ্যান্ড কনটেমপোরারি ন্যারেটিভস’ শিরোনামের সেমিনার ও ‘আর্ট, পেডাগোগি অ্যান্ড প্রমোশন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার শেষ দিনের কার্যক্রম। অংশ নিয়েছেন জাপানের প্রখ্যাত শিল্পী তেতসুইয়া নোদা ও আন্তর্জাতিক চিত্রসমালোচক সংস্থার সভাপতি মারেক বার্টেলিক। এবারের আয়োজনে স্থান পেয়েছে দেশী-বিদেশী শিল্পীদের মোট ৩৬৮ চিত্রকর্ম, ছাপচিত্র ও আলোকচিত্র, ৩৩টি ভাস্কর্য, ৫২টি ইলাস্ট্রেশন আর্ট এবং ৩০ পারফরম্যান্স আর্টিস্টের শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শনী। অংশগ্রহণকারী দেশ এবং শিল্পকর্ম সংখ্যা বিবেচনায় এটাই দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় আয়োজন। মাসব্যাপী এ আয়োজনে প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।